নিজেকে রক্ষা কর ! ১

নিজেকে রক্ষা কর ! ২

মানিক: আমরা সবাই জানি, অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কে ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিগুলো আসলে কি এবং শারীরিক সম্পর্ক কখন অনিরাপদ?

রিমা: চলো, আরো বিস্তারিতভাবে দেখি। তুমি যত বেশি জানবে, ততোই নিজেকে এবং তোমার সঙ্গীকে রক্ষা করতে পারবে। উভয়ের জানা দরকার।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৩


তুমি কি জানো যৌনবাহিত রোগগুলো কি কি ?

যৌনবাহিত রোগ যৌন সম্পর্কের ফলে সংক্রামিত হয়, যা শুধুমাত্র যৌনমিলনের মাধ্যমে ছড়ায়।

এগুলি মানুষের শরীরের তরল পদার্থ যেমন : বীর্য, যোনিরস এবং রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়।

শুধুমাত্র একবার অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কই সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট, কিন্তু অবশ্যই অধিক সঙ্গী মানেই অধিক ঝুঁকি।

অধিকাংশ যৌনবাহিত রোগেরই চিকিৎসা আছে। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা না করলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন: প্রজননতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৪


যৌনবাহিত রোগ হয়েছে কিনা কীভাবে জানবে?

যৌনবাহিত রোগের কিছু লক্ষণ হলো:

  • যৌনাঙ্গের আশেপাশে চুলকানি (কিন্তু সব চুলকানির অর্থই যৌনবাহিত রোগ নয়)।
  • যৌনাঙ্গের ঘা, জ্বালাপোড়া, ফোঁসকা, ফোঁড়া বা লাল ফুসকুড়ি হওয়া।
  • লিঙ্গ বা পায়ুপথ থেকে পুঁজ নিঃসরণ হওয়া।
  • যোনিপথ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব নিঃসরণ হওয়া (সকল সাদা স্রাব নিঃসরণের অর্থই যৌনবাহিত রোগ নয় )।
  • শারীরিক সম্পর্কের সময় বা প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হওয়া।

মনে রেখো: কোন লক্ষণ ছাড়া বা কোন কিছু বোঝা না গেলেও যৌনবাহিত রোগ হতে পারে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৫

যৌনবাহিত রোগ কি চিকিৎসায় ভালো হয়?


হ্যাঁ, অধিকাংশ যৌনবাহিত রোগই চিকিৎসায় ভালো হয়। কিন্তু তোমাকে একজন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বা ভিসিটি/রিসোর্স সেন্টারে যেতে হবে।


যৌনরোগ এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে না এবং চিকিৎসা না নিলে অথবা গ্রাম্য কবিরাজ বা ডাক্তারের দ্বারা চিকিৎসা করালে ভালোর চেয়ে মন্দই বেশি হবে।


এইডস হলো এমন একটি যৌনবাহিত রোগ যার কোন নিরাময় নেই। এইচআইভি একটি ভাইরাস যার ফলে এইডস রোগ হয়। এইচআইভি ভাইরাস মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়।


এইডস রোগের কোন টিকা নেই।


নিজেকে রক্ষা কর ! ৬

সাধারণ যৌনবাহিত রোগগুলো কি কি?

সিফিলিস, ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া যৌনবাহিত রোগ। যদিও সহজে চিকিৎসার মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এদের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থাকতে পারে। যেমন:

  • এই রোগগুলি ছেলে এবং মেয়েদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে।
  • শরীরে এইচআইভি জীবাণু প্রবেশে সহায়তা করে।

ডাক্তারের চিকিৎসায় ফোঁড়া, ফুসকুড়ি এবং জন্ডিস ভালো হয়। যৌনাঙ্গে চুলকানি হলেও খুবই অস্বস্তিকর হতে পারে: সঠিক ঔষধের মাধ্যমে এটা সারিয়ে তোলা সম্ভব।

অবশ্যই আমরা সবাই এই রোগগুলো এড়িয়ে চলতে চাই!

নিজেকে রক্ষা কর ! ৭

যৌনবাহিত রোগ এবং এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ করি।

নিরাপদ যৌন আচরণের তিনটি উপায় অনুসরণ করা যায়: A, B, এবং C।
ইতোমধ্যে কেউ হয়তো A সম্বন্ধে জেনেছো।

পরবর্তী স্লাইডে যে আলোচনা হবে তা তোমাদের ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৮

A = Abstain (বিরত থাকা)
যাতে আমরা বুঝবো শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা। শারীরিক সম্পর্ক অন্যভাবেও হতে পারে যেমন: জড়িয়ে ধরা, চুমু খাওয়া, আদর করা ইত্যাদি।

B = Be faithful (বিশ্বস্ত থাকা)
সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা বুঝায়। কিন্তু প্রথমে: যৌনবাহিত রোগ এবং এইচআইভি পরীক্ষা করা। উভয় সঙ্গীকেই শতভাগ বিশ্বস্ত থাকা প্রয়োজন। দুজনের মধ্যে থেকে যদি কারোর নতুন সঙ্গী অথবা একাধিক সঙ্গী থাকে তাহলে দু’জনেরই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

C = Condom (কনডম)

প্রতিবারই শারীরিক সম্পর্কের সময় সঠিক পদ্ধতিতে কনডম ব্যবহার করা। কনডম ব্যবহার করতে না চাইলে বিশ্বস্ত সঙ্গী ছাড়া কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক না করা।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৯


এটি শুনতে সহজ মনে হলেও আমাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যখন:

  • তরুণ-তরুণীরা তাদের পছন্দের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকেনা;
  • নিজেদের ব্যাপারে খামখেয়ালী থাকে;
  • সঙ্গীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে কথা বলে না;
  • নিরাপদ পদ্ধতির ব্যাপারে আলোচনা করতে ভয় পায়।

এর জন্য যুবাদের যোগাযোগ এবং আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর দক্ষতা প্রয়োজন। কারণ যখনই কেউ একটি স্বাস্থ্যকর/নিরাপদ পন্থা অবলম্বন করতে চাইবে, তখন এ বিষয়ের উপর জোর দেওয়া সহজ হবে। নিজেকে ও সঙ্গীকেও নিরাপদে রাখা যাবে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১০

ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা সহজেই যৌনবাহিত রোগে সংক্রমিত হয়। কেউ কি জানো কেন হয়?

নিজেকে রক্ষা কর ! ১১

মেয়েদের যৌনবাহিত রোগে সংক্রমিত হওয়ার ৪টি প্রধান কারণ:

১. অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের সময় পুরুষের সংক্রমিত বীর্য নারীর শরীরের ভেতর থেকে যায়। এর ফলে এইচআইভিসহ অন্য যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

২. মেয়েদেরকে সবসময় ছেলেদের অধস্তন থাকার শিক্ষা দেওয়া হয়। নিরাপত্তার জন্য কনডম ব্যবহার বা শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও অন্য কোনো কম ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের ব্যাপারে সমঝোতা করার দক্ষতা বা আত্মবিশ্বাস মেয়েদের নেই।

৩. বেশিরভাগ দম্পতিদের মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বয়স বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে মেয়েটির পক্ষে সঙ্গীকে বোঝানো এবং নিজেকে যৌনবাহিত রোগ, এইচআইভি ও অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের হাত থেকে বাঁচানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

৪. অপ্রত্যাশিত শারীরিক সম্পর্কের (জোর করা, নিপীড়ণ করা এবং ধর্ষণ করা) শিকার হয়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এ অবস্থায় যে কাউকে নিজেকে রক্ষা করা খুব কঠিন।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১২

আমাদের সংস্কৃতিতে মেয়েদেরকে সব সহ্য করতে বলা হয় এবং ছেলেরা যা চায় তাই-ই করবে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, আমাদের এ প্রথার অবশ্যই পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

রোমাঞ্চকর অনুভূতি প্রকাশের ক্ষেত্রে মেয়েদের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। কোন মেয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে না চাইলে তার ‘না’ বলার অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে তাকে জোর করা যাবে না। ছেলেদের মতো মেয়েদেরও শারীরিক সম্পর্কের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, সঠিক সময় এবং স্থান পছন্দ করার অধিকার রয়েছে।

মেয়েরা নিজেদের অধিকারের জন্য কথা বলো!

ছেলেরা নিজেদের সঙ্গীর ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে শিখো।


নিজেকে রক্ষা কর ! ১৩

মেয়েরা ভবিষ্যতে মা হবে; তাদের সুরক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের সুরক্ষার জন্য পুরুষেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৪


যৌনবাহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে কী কী করা যেতে পারে?

  • একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করা।
  • যুববান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র যাওয়া। যেখানে যৌনবাহিত রোগের পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয় অথবা কম টাকায় দেয়া হয়।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৫

বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রয়েছে এমন স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে যেতে তোমাদের ভয় পেলে চলবে না। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা তরুণ-তরুণীদের সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত। যুবাদের স্বাচ্ছন্দ্য, আরামদায়ক ও নিরাপদ পরিবেশে এবং গোপনীয়তা বজায় রেখে সেবা প্রদান করা তাদের দায়িত্ব।

স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে যেতে তোমাদের অস্বস্তি লাগলে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকো। মনে রাখা দরকার, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া তোমারও অধিকার ।

ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা কী করবে?

যৌনবাহিত রোগ হয়েছে কীনা তা জানার জন্য প্যাথলজিতে রক্তেরও প্রস্রাবের পরীক্ষা করতে বলবে। পরীক্ষার কিছুক্ষণ পর বা কিছুদিন পরে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যাবে। পরীক্ষাতে এইচআইভি না হয়ে শুধু যৌনবাহিত রোগ ধরা পড়লে তারা ঔষধ দিবে।

নিয়মানুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঔষধ সেবন করা এবং শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকাই ভালো।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৬

ভাল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো দেওয়া হয়। যেমন:

  • সঙ্গীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার ক্ষেত্রে করণীয়সমূহ;
  • এইচআইভির পরীক্ষা করার নিয়মাবলী;
  • কনডম ব্যবহারের জন্য সঙ্গীর সাথে কথা বলার প্রয়োজনীয়তা;
  • গর্ভনিরোধের সঠিক পদ্ধতি ব্যবহারের উপযোগিতা;
  • সঙ্গীর সাথে যৌনবাহিত রোগ সম্পর্কে সমঝোতা করার কৌশল।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৭


কারো যদি যৌন বাহিত রোগ হয় তার মানে তাদের সঙ্গীরও যৌন রোগ হতে পারে।

তাই, সঙ্গীও যাতে পরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা পায়, সে ব্যাপারে তাকেও নিশ্চিত করা।

মনে রাখা দরকার, সঙ্গীকে সঠিক চিকিৎসা ও পরীক্ষা করার ব্যাপারে বলতে অস্বস্তি হলেও বলা দরকার।

প্রবাদ আছে: যে সবসময় সত্য কথা বলে, সে কখনও ভুল করেনা।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৮

ভ্রান্ত ধারণা

কেউ দেখতে সুস্থ, স্বাস্থ্যবান, পরিষ্কার বা ভালো কাপড়-চোপড় পড়লে সে নিরাপদ।

সঠিক ধারণা!

কখনও দেখে বলা যায়না যে করোর যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি আছে কি না।

ভ্রান্ত ধারণা

একই টয়লেট ব্যবহার করলে যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভিতে আক্রান্ত হতে পারে।

সঠিক ধারণা!

একই কাপড়, টয়লেট ব্যবহার করলে, এক বিছানায় ঘুমালে, মশার কামড়ে, সাঁতার কাটলে, একসাথে খেললে, জড়িয়ে ধরলে, স্পর্শ করলে, কোলাকুলি ও চুমু খেলেও যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভিতে আক্রান্ত হবে না।

নিজেকে রক্ষা কর ! ১৯

ভ্রান্ত ধারণা

যাদের অনেক যৌনসঙ্গী আছে কেবল তাদেরই যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি হবে।

সঠিক ধারণা

শুধু একবার অনিরাপদ যৌন মিলনই যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

ভ্রান্ত ধারণা

কেউ কনডম ব্যবহার করতে চাওয়া মানেই তার যৌনবাহিত রোগ আছে !

সঠিক ধারণা

যারা সঙ্গীর প্রতি দায়িত্বশীল এবং সম্মান প্রদর্শন করে তারাই কনডম ব্যবহার করে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২০

তাহলে কনডম ব্যবহারের উপায় জানি!

এটাই একমাত্র পদ্ধতি যার মাধ্যমে যৌন মিলন করলেও যৌনবাহিত রোগ, এইচআইভি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ থেকে নিরাপদ থাকা যায়।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২১

কেউ কি জানো, সঠিক উপায়ে কীভাবে কনডম ব্যবহার করতে হয়?

বিভিন্ন কারণে অনেকেরই কনডম ব্যবহার করতে সমস্যা হয়। তাদের অযৌক্তিক বাহানা বা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। যেমন:

  • কনডম বাংলাদেশের পদ্ধতি না;
  • কনডমের ছিদ্রের মধ্যে থেকে জীবাণু যেতে পারে;
  • এটা ঠিকমত লাগেনা;
  • এইচআইভি নিজেই সিদ্ধান্ত নেয়, কাকে আক্রান্ত করবে;
  • এগুলো সবই ভ্রান্ত ধারণা এবং কনডম ব্যবহার না করার জন্য বাহানা।

মনে রাখা ভালো, শারীরিক সর্ম্পক না করলে কনডম ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। যদি কেউ করে প্রতিবারই কনডম ব্যবহার করা ভালো।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২২

কনডম ব্যবহার পদ্ধতি

১. কনডম যাতে না ছিঁড়ে এভাবে মোড়কটি খোলা (খোলার জন্য কখনও ধারালো বস্তু ব্যবহার না করা এবং নখের ব্যপারে সর্তক থাকা)। এরপর কনডমটি ধীরে ধীরে বের করা।

২. শক্ত লিঙ্গের অগ্রভাগে কনডম এবং কনডমটির মাথা ধরে রাখা। রোলটি যেন কনডমটির বাইরের দিকে হয় নিশ্চিত করা।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৩

৩. কনডমের মাথার দিকে হালকা করে চাপ দেয়া যাতে বাতাস বের হয়ে যায়। এবার কনডমটিকে লিঙ্গের গোড়া পর্যন্ত গড়িয়ে নামিয়ে আনা। কনডম পরা থাকা অবস্থায় নিরাপদে শারীরিক সম্পর্ক করা।

৪. বীর্য নির্গত হবার পরে লিঙ্গের গোড়ায় কনডম ধরে রাখা। কনডম পরে থাকা এবং লিঙ্গ নরম হয়ে যাবার পূর্বে তা বের করে আনা। বীর্য যাতে বের হয়ে না আসে সেভাবে সাবধানে কনডমটি খুলে ফেলা। ব্যবহারকৃত কনডম নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিতে হবে।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৪

সাবধানতা:


  • ব্যবহৃত কনডম একবারের বেশি ব্যবহার না করা।
  • কখনও একটার উপরে আরেকটা কনডম ব্যবহার না করা।
  • কখনও তেলের লুব্রিকেন্ট ব্যবহার না করা, করলে পানির লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা।
  • কনডম সবসময় ঠান্ডা, অন্ধকার এবং শুষ্ক স্থানে রাখা।
  • কনডমের মোড়ক ছিঁড়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে ব্যবহার না করা।
  • ব্যবহারের মেয়াদ হয়ে গেলে ব্যবহার না করা।

কনডমের ব্যবহার সঠিকরূপে করতে হলে জেনে রাখা ভালো।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৫


অনেকেই শারীরিক সম্পর্কের সময় কনডম ব্যবহার করাকে আনন্দদায়ক মনে করে, কারণ পরবর্তীতে নিশ্চিন্ত থাকা যায় এবং কোন ঝুঁকি নেই।

আবার অনেকে শারীরিক সম্পর্কের সময় কনডম ব্যবহারে আনন্দ পায়না। কারণ, তারা সারাজীবন কষ্ট করার অযৌক্তিকভাবে ঝুঁকি নেয়।

কনডম পড়তে হয়তো সময় লাগতে পারে ! তবে তাড়াতাড়ি না করাই ভালো।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৬

তুমি কি পছন্দ করতে পারো !!!!

এইচআইভি সংক্রমণ বা অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঝুঁকি হওয়ার চাইতে কনডম ব্যবহার করা অথবা সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করা কি উচিত নয়?

কনডম উভয় সঙ্গীর জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে; সেই সাথে বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং যত্নশীলতার প্রকাশ করে।

সুতরাং, অনেক তরুণ আনন্দের জন্য যৌনমিলনে আগ্রহী হয়। কিন্তু তাদের যৌনবাহিত রোগের বাস্তব এবং সত্যিকারের ঝুঁকি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করা প্রয়োজন। কারণ, এর ফলে অল্পবয়সে মৃত্যুসহ বন্ধ্যাত্বও হতে পারে।

সঙ্গীর সাথে আলোচনা করে A, B এবং C এর মধ্যে থেকে যেকোন একটি পদ্ধতি বেছে নিতে হবে।

যোগাযোগ এবং সমঝোতার দক্ষতা ব্যবহার করে যার যার পছন্দ অভ্যাস করা যায়।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৭

এখানে A, B এবং C এর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার জন্য একটি অনুশীলনী রয়েছে।

এই অনুশীলনীটি একা করতে হবে কারণ, সবাইকে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে।

সূচনা: যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি প্রতিরোধের একটি উপায় হলো সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা। সবাই যদি সারা জীবন একজন সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকত তবে কোন যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি থাকত না। লাখ লাখ মানুষের যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি থাকা প্রমাণ করে যে, অনেকেই বিশ্বস্ত নয়।
এর বাইরে যৌনবাহিত রোগ বা এইচআইভি প্রতিরোধের দুইটি উপায় রয়েছে। একটি হলো বিরত থাকা (শারীরিক সর্ম্পক থেকে) এবং আরেকটি হলো প্রত্যেকবার যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৮


১ম ধাপ, একটি কাগজকে দুই টুকরো করে একটি অংশে কোন শারীরিক সম্পর্ক নয় এবং অপরটির অংশে কনডম লিখো।


২য় ধাপ, একটি সারিতে শারীরিক সম্পর্ক না করার কারণ এবং অন্য সারিতে কনডম ব্যবহারের কারণগুলি লিখো।


৩য় ধাপ, এখন দুইটি সারিতে উল্লেখিত কারণগুলোর মধ্যে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নাও।

কোন সিদ্ধান্তটি নিতে চাও: যৌনমিলন না করা, নাকি কনডম ব্যবহার করা।

নিজেকে রক্ষা কর ! ২৯

শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার জন্য যা বলা হবে।

১) আমি এখনও শারীরিক সম্পর্কের জন্য তৈরি নই;

২) আমি পরিবারের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি, আরও বড় না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব;

৩) আমি এখনও কারোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেইনি ইত্যাদি।

কনডম ব্যবহার করার উদাহরণঃ

১) আমি শারীরিক সম্পর্ক করছি কিন্তু, যৌনবাহিত রোগ বা অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারন করতে চাই না;

২) যৌনবাহিত রোগ, এইচআইভি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ থেকে কনডম ভাল নিরাপত্তা দেয়।

নিজেকে রক্ষা কর ! ৩০

মনে রাখা প্রয়োজন:

নিরাপদ এবং দুজনের সম্মতিক্রমে যৌন মিলনই হলো সঙ্গীর প্রতি দায়িত্বশীলতার পরিচয়।

এটা সঙ্গীকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং নিরাপদবোধ নিশ্চিত করে।

যৌনবাহিত রোগ, এইচআইভি/এইডস এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ থেকে সুরক্ষিত রাখে।

আসুন, সবাই নিরাপদে থাকি ।