এসো জেন্ডার নিয়ে কথা বলি
এটা কী?
তোমরা কি ছবিগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্য
দেখতে পাও?
ছোটকাল থেকে আমরা ছেলে ও মেয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখি। আমরা ছেলে এবং মেয়েদের ভিন্নভাবে দেখে থাকি।
উদাহরণস্বরূপ, চিন্তা করো, তোমার মেয়ে
বন্ধুকে তুমি কীভাবে শুভেচ্ছা জানাও,
পাশাপাশি তুলনা করো তুমি তোমার
ছেলে বন্ধুকে কীভাবে শুভেচ্ছা জানাও।
জেন্ডার হলো...
নারী-পুরুষের এবং ছেলে-মেয়ের বৈশিষ্ট্য,
সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিচিতি
অর্থাৎ সমাজ ও সংস্কৃতি নারী পুরুষকে
যেভাবে দেখতে চায় জেন্ডার তারই প্রতিফলন।
এ কথা সত্যি যে, আমারা সকলেই মানুষ। তবে আমাদের মধ্যে কেউ পুরুষ, কেউ নারী, কেউ তৃতীয় লিঙ্গ (আমরা যাদের হিজড়া বলি)। লিঙ্গের ভিত্তিতে এই পার্থক্য তৈরি হয়েছে জন্মগতভাবে বা প্রাকৃতিকভাবে।
পরিবারে ও সমাজে, সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় ছেলে ও
মেয়ের মধ্যে সামাজিক পার্থক্য তৈরি করা হয় যা বৈষম্যমূলক।
ছেলে ও মেয়ের এই সামাজিক পার্থক্য পরিবর্তন করা যায়।
জেন্ডার ভূমিকা
ভেবো দেখ, জীবনের বেশিরভাগ সময় নারী এবং পুরুষ ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে, ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে। কিন্তু এটা কি জন্মগত নাকি আমরা নিজেরা ছেলে-মেয়ের ভিন্ন ভিন্ন কাজ নির্ধারণ করেছি।
এখন আমরা দলগতভাবে লিখবো:
নারীর কাজ
তোমরা হয়তো ভাবতে পারো, সন্তানের লালন পালন করা সবসময় নারীর কাজ এবং অনেক পরিবারে তো মেয়েরা ছোটকাল থেকে অন্যান্য শিশুদের দেখভাল করে আসছে।
সন্তান ধারণ, জন্মদান ও বুকের দুধ খাওয়ানো একমাত্র নারী করতে পারে। কিন্তু সমাজ নির্ধারণ করে দেয় যে, নারীকে জন্মদানের পাশাপাশি তার সন্তানের লালনপালনও করতে হবে। আবার গৃহস্থালি কাজের মূল দায়িত্ব তাকেই পালন করতে হয়।
চারপাশে খেয়াল করলে দেখতে পাই, ছেলেরাও রান্নার কাজ করে খাবার হোটেলে। ছেলেরাও ঘর গোছানোর কাজ করে আবাসিক হোটেলে। থালাবাসন পরিষ্কার করে হোটেল-রেস্তোরাঁয়। তার মানে ছেলেরা গৃহস্থালী সব কাজই পারে। কিন্তু তারা তা করে অর্থের বিনিময়ে। তারা চাইলে বাইরের কাজের পাশাপাশি সংসারের কাজ, সন্তান লালনপালনেও অবদান রাখতে পারে।
নারীর কাজ
বাংলাদেশের অনেক নারী ক্ষেতখামারে কাজ করে,কলকারখানায় কাজ করে। সরকারি-বেসরকারি অফিসে কাজ করে। ঘরের বাইরে মেয়েরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং পেশায় কাজ করে। বাংলাদেশে নারী এখন সচিব, ব্যাংকার, পুলিশ অফিসার, বোমারু বিমানের পাইলট, বিদেশে শান্তি রক্ষা বাহিনীর সদস্য, রির্পোটার, গবেষক, ট্রেন চালক এমনকি পর্বতারোহী। নারী সামাজিকভাবে স্বীকৃত পুরুষের সব কাজ করতে পারে।
পরিবার ও সমাজ শেখায়, ছেলেরা বাইরে আয় উপার্জনের কাজ এবং সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে। অপরদিকে মেয়েদেরকে শেখায়, সন্তান লালন পালন সহ গৃহস্থালির সকল কাজ যার কোনো আর্থিক মূল্য নেই। মেয়েরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। এই ব্যবস্থায় ছেলেরা অর্থ, তথ্য ও কৌশল আয়ত্ব করে ক্ষমতাশীল আর মেয়ারা ছেলেদের উপর নির্ভরশীল ও ক্ষমতাহীন হয়ে ওঠে।
সন্তান লালন পালনের কাজ কখনো একজন নারীর জন্য নির্ধারিত হতে পারে না। যদিও কোন কোন দেশে এই কাজটি পুরোপুরি মায়ের উপর অর্পিত। কিছু দেশে এই কাজ নারী ও পুরুষ উভয়ে ভাগাভাগি করে নেয়।
উদাহরণস্বরূপ সুইডেনে, বাবারা তিন মাসের বেতনসহ ছুটি পায় যাতে তারা নবজাতকের দেখাশোনা করতে পারে।
একটি চীনা সম্প্রদায়ে বাবারা শিশুদের দেখাশোনা করে এবং মায়েরা কাজে যায়।
আবার ইসরাইলের কিবুতজ নামক একটি গোষ্ঠীর সব শিশুদের দেখাশোনা করা হয় দলগতভাবে। বাবা-মায়েরা শুধুমাত্র ছুটির দিনে তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করেন।
ভিন্ন ভিন্ন সমাজে নারী-পুরুষ এবং ছেলে-মেয়েদের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে।
তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছ, নারী নেতার চেয়ে পুরুষ নেতা কেন বেশি?
এর উত্তর হতে পারে
তোমার পছন্দের উত্তর বেছে নাও!
সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উত্তর হলো
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের সমান সুযোগ দেওয়া হয় না।
আমাদের দেশে অল্প সংখ্যক শিক্ষিত নারী উচ্চপদে অবস্থান করছে। তারপরেও তারা নেতা হয়ে উঠতে পারছে না। কারণ বেশিরভাগ নারীর পরিবারে ও সমাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমান অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে না। পরিবার ও সমাজ থেকে নারী নেতৃত্ব দিতে বাধার সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রীয় বিধি ব্যবস্থাও মেয়েদের নেতৃত্ব বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে অক্ষম। সমাজে নারীর নেতৃত্ব বিকাশের জন্য প্রয়োজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব এবং রোল মডেল।
চল,
আলোচনা করি
মেয়েরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার
সমান সুযোগ কেন কম
পায়?
মেয়েরা শিক্ষার সমান সুয়োগ পায় না
আমাদের সমাজে অনেক পরিবার অভাবের কারণে ছেলে মেয়ে উভয়কেই উপযুক্ত পড়াশুনা করাতে পারে না। কিন্তু পরিবারকে যখন ছেলে এবং মেয়ের মধ্যে যে কোন একজনকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন তারা মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। শিক্ষার ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে কোনো বৈষম্য করা যাবে না।
এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, ছেলে এবং মেয়েদের সমান বুদ্ধিমত্তা ও যোগ্যতা রয়েছে। এমনকি, অনেক দেশে মেয়েরা শিক্ষার দিক দিয়ে ছেলেদের চেয়ে ভাল করছে। পরিবারে মেয়েদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
জেন্ডার সম্পর্কিত নিন্মোক্ত বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তা করি:
ছেলে মেয়ের বৈষম্য পরিণতি : বাল্যবিয়ে
আইন মতে বিয়েতে ছেলের বয়স ২১ এবং মেয়ের বয়স ১৮ হতে হয়। বিয়েতে ছেলেমেয়ে যে কারো বয়স এর কম হলে, তা আইনমতে বাল্যবিয়ে বলে গণ্য হয়। শিশুবিয়ে একটি অপরাধ।
বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিক
অধিকাংশ বাল্যবিয়েতেই ছেলের পড়াশোনা চালু থাকলেও মেয়ের পড়াশোনা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে অনেক মেয়ের লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সব সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায়। অল্প বয়সে যারা বিয়ে করে তারা আর শৈশব-কৈশোরের মুক্ত স্বাধীন জীবনযাপন করতে পারে না। বিশেষ করে মেয়েরা সম্পূর্ণরূপে গৃহবন্দি হয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ির বিভিন্ন ধরনের কাজ তাদের কাঁধে চেপে বসে। অনেকের সময়মতো ও প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম করা হয় না। ফলে তারা অপুষ্টিতে ভুগতে থাকে।
বাল্য বিয়ের ক্ষতিকর দিক -
সংসার জীবন শুরু করার এবং মা হবার জন্য একজন কিশোরীর মানসিক পরিপক্কতা ও শরীর
সন্তান প্রসবের উপযোগী হয় না। ২০ বছরের পূর্বে মেয়েদের দেহের পূর্ণতা প্রাপ্তির আগেই
যদি কেউ সন্তান ধারণ করে তাহলে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
এরকম ক্ষেত্রে প্রায়ই প্রসবের সময় নানা জটিলতা দেখা দেয়। কখনো কখনো মায়ের মৃত্যু হয়, কখনো-বা শিশুর। মৃত্যু যদি নাও ঘটে, সাধারণত দেখা যায়, শিশু অপুষ্টিগ্রস্থ বা কম ওজনের হয়। কখনো কখনো প্রসবের জটিলতায় মায়ের প্রজনন অঙ্গে স্থায়ী ক্ষতি হবারও সম্ভাবনা দেখা দেয়।
অল্প বয়সী মা বাচ্চা হওয়ার ফলে শরীরের যত্ন নিতে পারেনা। ফলে মেয়েদের চেহারা এবং শরীর নষ্ট হয়ে যায়। অনেকের বুকের দুধ কম হয়, তাই বাচ্চা ও মা পুষ্টির অভাবে, রক্ত কম থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মা-বাবা হবার পর দুজনের মাথায়ই সংসার ও সন্তানের চাহিদা মেটানোর জন্য আয় উপার্জনের
চিন্তা ভর করে। এতে কিছুদিনের মধ্যেই দুজনের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যায়। কোনো কোনো
বেকার স্বামী এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে টাকা এনে দেবার
জন্য স্ত্রীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
ছেলে মেয়ের বৈষম্য পরিণতি: যৌতুক
আমাদের সমাজে মেয়েরা যৌতুকের শিকার হয়ে হত্যাসহ নানাবিধ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
যৌতুক বলতে বিয়ের সময় বরের বাবা-মা বা আত্মীয়রা কনের বাবা-মা বা আত্মীয়ের কাছ থেকে যে টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি নিতে চায় তাই যৌতুক। যৌতুক বিয়ের কোনো অংশ নয়। এটি একটি সমস্যা। যৌতুক নারী নির্যাতনের প্রধান কারণ।
যৌতুক নিরোধ আইন ও শাস্তিঃ
আমাদের দেশে যৌতুক নিরোধ আইন অনুযায়ী, যৌতুক দেয়া বা নেয়া এক ধরনের অপরাধ। যদিও আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোকই তা মানে না।
এই আইনে কোন ব্যক্তি যদি বিয়ের সময় কোন যৌতুক, যেমন- টাকা-পয়সা, ঘড়ি, টিভি, সাইকেল ইত্যাদি নেয় তবে যে নেবে ও যে দেবে তাদের উভয়কেই ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত জেল খাটতে হবে অথবা তাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আবার জেল জরিমানা দুটোই একসাথে হতে পারে।
ছেলে বা মেয়ে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে গর্ব করার
মতো কোন না কোন বিষয় রয়েছে।
এসো, আমরা দলে বসে সেগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। একটি মেয়ে বা ছেলের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা তোমার পছন্দ তা লিখো।
"একটি সম্মিলিত প্রতিবাদ পুরুষ এবং নারীকে শক্তিশালী করবে।"
- নেলসন ম্যান্ডেলা
সব কিছু পরিবর্তিত হয়
এবং যুব সমাজই
এই পরিবর্তন আনতে পারে।
জেন্ডার সমতা বিষয়ক ক্যুইজ
দলে বসে নিচের মন্তব্যগুলো দেখে তোমরা মতামত দিতে পারো, কার কথার সাথে তোমরা একমত এবং কেন?
তোমার দল কি ভাবছে?
তোমরা কি মনসুর, কমল ও ইমরুল এর পারিবারিক বিষয়ের মন্তব্যের সাথে একমত?
আলোচনাঃ
পরিবারের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ব্যাপারে মনসুর এবং ইমরুল এর মতামত গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। অবশ্যই কমলের নিজস্ব মতামত থাকতে পারে এবং মতামত যাই হোকনা কেন সে বিষয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলা ভাল।
কিন্তু তোমরা কি সত্যিই এটা ভাবো যে, পরিবারে ছেলে মেয়ে উভয়ই চাকরি করতে পারে? উভয়ক্ষেত্রে মেয়েদের উপর পরিবারের সকল দায়িত্ব এবং কাজের ভার ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তোমার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করতে পারো।
বন্ধুরা,
তোমরা কি মেয়েদের গায়ে হাত তোলার ব্যাপারে আলিফ, অঞ্জন এবং রোমানার সাথে একমত?
আলোচনা
এটা সহজে বোঝা যায় যে, আলিফের তার মাকে মার খেতে দেখে খারাপ লাগে। এটা রোমানার জন্য শিক্ষা যে, সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে মারতে পারে এমন স্বামী সে চায় না। আর মাহিন তার বাবা মার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক দেখেছে।
তোমাকে আঘাত করার অধিকার কারোর নেই। এমনকি তোমার স্বামীরও। এটা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ।
অঞ্জন ভাবে যে, মেয়েদের গায়ে হাত তোলা দরকার। যদিও এটা একটা পুরাপুরি ভুল ধারণা। সে এভাবে বেড়ে উঠেছে এবং সে পরিবারের পুরুষদের মেয়েদের মারার উদাহরণ দেখেছে। সে এমন কোনো দম্পতি দেখেনি যারা এক অপরের সাথে নির্যাতনমুক্ত হয়ে সমতামূলক আচরণ করেছে!
আলোচনা কর
কৃষিকাজ বিষয়ে তোমরা কি মনি, জনি এবং মুনিরার সাথে একমত?
আলোচনা
"পুুরুষ মনে করে, সেই একমাত্র জানে পরিবারের জন্য উপযুক্ত ফসল কোনটা হবে”- জনিকে তার একথাটি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কারণ পরিবারে মেয়েদের ফসল প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের দক্ষতা এবং পরিবারকে খাবার তৈরি করে খাওয়ানোর ব্যাপারে বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এক্ষেত্রে ফসল ফলানোর বিষয়ে পরিবারে ছেলে ও মেয়ে একসাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভাল।
মেয়ে বন্ধুরা,
পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে তোমরা কি জান্নাত, লিমা এবং শিখার সাথে একমত?
আলোচনা
পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকলে একে অন্যের জন্য চিন্তা করবে। লিমা ও শিখা বোধ হয় মনে করে যে, পরিবার পরিকল্পনা, সন্তান জন্মদান শুধুমাত্র নারী স্বাস্থ্যের বিষয়। কিন্তু পুরুষরাও পরিবারের অংশ। সুতরাং এক অপরের সাথে আলোচনা করে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।
তোমরা একে অন্যের ব্যাপারে চিন্তা কর, তবে তোমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে এবং একে অন্যের মতামত শুনতে চাইবে।
হয়তো, লিমা ও শিখা তারা বাস্তবে যা হতে দেখেছে তার উপর ভিত্তি করেই মতামত দিয়েছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, জন্মনিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি গ্রহণ মেয়ের উপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। প্রত্যেক মেয়ের অধিকার রয়েছে সে পদ্ধতি গ্রহণ করবে কি করবে না।
আলোচনা কর
কুমারীত্ব বিষয়ে তোমরা কি মুসা, ফারিয়া ও আমিনার সাথে একমত?
আলোচনা
তোমরা একটু খেয়াল করলে দেখবে, শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে ছেলেদের এবং মেয়েদের মতামতের এত পার্থক্য। কেন?
আসলে এই গতানুগতিক মতামতগুলি কোথাও কোথাও প্রচলিত আছে। তোমারা কি একমত হবে? শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকলেরই জেনে-শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার? এটা ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য একটা বড় দায়িত্ব।
মুসার কথা ভিত্তিহীন যে, যেসব ছেলেরা অনেক মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে না তারা স্মার্ট নয়। অবশ্যই প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত থাকতে পারে।
শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয়ের প্রস্তুতি প্রয়োজন এবং এক অপরের সাথে সম্মতি, বিশ্বাসযোগ্যতা, পারস্পরিক সমঝোতার সাথে দায়িত্বশীল আচরণ করলে সেটাই হতে পারে শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত।
ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে যে সামাজিক পার্থক্য রয়েছে তা যার যার মতো অনন্য। কিন্তু সামাজিকভাবে তৈরি এই পার্থক্যের জন্য ছেলেদের কোন সুবিধার বা মেয়েদের কোন কষ্টের ভাগীদার করা যায় না।
শুধুমাত্র জেন্ডার সমতার দ্বারা নারী-পুরুষ, তথা ছেলে-মেয়ে উভয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা, পারস্পরিক সমঝোতা ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ তৈরি সম্ভব, যেখানে সবার সমান মর্যাদা, সমান অধিকার ও সমান স্বাধীনতা থাকবে।
বৈষম্য দূর করি, জেন্ডার সমতা চর্চা করি!
সমাপ্তি...