হ্যাঁ, আমি পারব। ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে মিশে তুমি জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে পার।
তোমার নিজস্ব মতামত দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
ভালো বন্ধুরা আমাকে মূল্যায়ন করে। তারা আমাকে শেখায় কীভাবে কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হতে হয়, কিভাবে বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলোকে যত্ন নিতে হয়।
তুমি কি জানো একজন ভালো বন্ধু তোমার আত্মসম্মানবোধ তৈরিতে অবদান রাখতে পারে?
একজন ভালো বন্ধু থাকা সবসময় সৌভাগ্যের। তার প্রতি আমার বিশ্বাস ও আস্থার জন্য আমার গোপন বিষয়গুলো শেয়ার করতে পারি পাশাপাশি আমি নিজেও তার ভালবন্ধু হওয়ার চেষ্টা করি। কারণ আমি জানি আমি তার কাছে উপহাসের পাত্র হব না।
এভাবে করে বন্ধুত্ব দৃঢ় হয়। উপহাসের শিকার হওয়ার ভয় না করে একজন ভালো বন্ধুর কাছে তুমি নিজেকে প্রকাশ করতে পার। গোপনীয়তাও তার কাছে প্রকাশ করতে পারো, আর জান যে, সেগুলো গোপন থাকবে।
তোমার বন্ধু তোমার সাথে একমত পোষণ না করলেও তোমাকে ভালোবাসবে এবং সম্মান করবে।
আমাদের আত্মপরিচয় নির্ধারণে বন্ধু-বান্ধব একটি বড় ভূমিকা রাখে। আমরা আমাদের স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা করি এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে একে অপরকে সাহায্য করি।
আমরা বন্ধুদের কাছে অনেক বিষয় জানতে পারি। যেসব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি তা নিয়ে স্বস্তিতে থাকার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সাহায্য করি।
বন্ধুরা নতুন নতুন জিনিস ও নতুন ধারণার সাথে পরিচিত করতে সহযোগিতা করে।
আমি যে বিষয়টি ভাবছি
এক সময় আমার একবন্ধু ছিল যে আমাকে অনেক নতুন বিষয়ের সাথে পরিচিত করে দিত। তার মধ্যে একটি ঘটনা ছিল মদ্যপান করা। প্রথম দিকে এটা মনে হতো উত্তেজনার এবং চমৎকার।
কিন্তু একসময় আমার কাছে আর ভালো লাগছিল না। আমি আমার বন্ধুকে বললাম আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত এবং খারাপ একটি অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত হচ্ছে না।
সে আমাকে গো-বেচারা ডেকেছিল এবং বলেছিল, আমি যদি তার সাথে যোগ দিতে না চাই তাহলে সে অন্য বন্ধু-বান্ধব খুঁজে নেবে, যারা তার সাথে যোগ দিতে প্রস্তুত।
আমার খারাপ লেগেছিল। আমি জানতাম যে, আমিই সঠিক ছিলাম। তবে আমার কোমল স্বভাব সম্পর্কে সে যা বলেছিল সেটাও বোধ হয় ঠিক ছিল।
আমরা দীর্ঘদিন বন্ধু ছিলাম এবং আমি তাকে দূরে সরিয়ে দিতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে আমার নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হলো এবং আমি তাকে বললাম -
"আমি তোমার বন্ধু হিসাবে থাকতে চাই, তবে আমি তোমার মদ্যপানের সাথী হবো না।"
আমি জানি যে, তারা তা করে থাকে। তবে আমি নিজে কখনও এর মুখোমুখি হইনি। আমার উদ্বেগের বিষয় অন্যকিছু।
আমাকে বল।
তুমি কি জানো কেন এমনটি হয়?
তুমি জানো, সম্প্রতি আমি এক নতুন স্টাইলের চুল কাটার জন্য পার্লারে গিয়েছিলাম। আমি আমার মাকে এই নতুন স্টাইলটি করার জন্য অতিষ্ট করে তুলেছি।
আমার বাবা-মার জন্য এটা বোধ হয় বেশি কঠিন এবং তারা ভেবে পাচ্ছে না যে, কোথা থেকে আমার মাথায় এমন অদ্ভুত খেয়াল এলো?
তারা এটাও ভেবে পাচ্ছে না, কেন আমি একাকী সময় কাটাতে চাই। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক কিছু বদলে গেছে। আমি আগে কখনো এটা তাদের মত করে ভেবে দেখিনি।
আমার পরিবারেরও মতামতের গুরুত্ব রয়েছে। পরিবারের মতামতের পাশাপাশি আমার ইচ্ছা ও পরিকল্পনাকে সাথে নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
আমার বেড়ে ওঠার পাশাপাশি শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তনগুলো বাবা মা অনেক সময় স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না।
খোলামেলা আলোচনা করতে না পারার কারণেই আমাদের মতো ছেলে-মেয়েদের সাথে বাবা-মায়ের অনেক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
আমি খুব অবাক হয়ে যাই যে, একসাথে বসে খুব সাধারণ একটি আলোচনা করা বড়দের জন্যও কি কঠিন!
আমি প্রথমে আমার নিজের নয় বরং আমার এক বন্ধুর নাম উল্লেখ না করে তার একটি সমস্যা নিয়ে মায়ের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করি।
এ সময় আমি অনুভব করি, আমার মা আমাকে ছোট মনে করছে না। আমি মনে করি এটা আমার নিজস্ব মূল্যবোধ সম্পর্কে তাকে একটা ধারণা দিয়েছে।
মূলত আলোচনা আমাদের উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস ও সমঝোতার সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করেছে।
আমি তোমাকে যে কথাগুলো বলেছি তুমি কি সেই ধরনের দু'একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছো?
এছাড়াও বন্ধুত্ব বা বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তুমি কি অন্য কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছো?
এই বিষয়ে তোমার বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে আলোচনা করা যেতে পারে।
চলো আমরা আলোচনা চালিয়ে যাই
★
সমাপ্ত